ঝিনাইদহ জেলার ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাসমূহ
উপজেলার নাম |
ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার নাম |
ঝিনাইদহ সদর |
০১। মরমী কবি পাগলাকানাই এর মাজার ০২। নলডাংগা সিদ্ধেরশ্বরী কালী মন্দির ০৩। কে,পি বসুর বাস ভবন,হরিশংকরপুর ০৪। মিয়ার দালান,মুরারীদহ ০৫। শ্রী শ্রী মদন মোহন মন্দির |
শৈলকুপা |
০১। শৈলকুপা শাহী মসজিদ ০২। কবি গোলাম মোসত্মফার বাড়ী,মনোহরপুর ০৩। কামান্না মুক্তিযুদ্ধ শহীদ মিনার ০৪। রামগোপাল মন্দির ০৫। রাজা হরিশ চন্দ্রের বাড়ী |
হরিণাকুন্ডু |
০১। সিরাজ সাঁই এর মাজার,হরিশপুর,জোড়াদাহ ০২। মরমী কবি ফকির লালন সাঁই এর ভিটা,হরিশপুর,জোড়াদাহ ০৩। পাঞ্জুশাহ এর মাজার,হরিশপুর,জোড়াদাহ |
কালীগঞ্জ |
০১। গাজী কালু চম্পাবতির মাজার ,বাদুরগাছা,বারবাজার ০২। ঐতিহাসিক গোড়ার মসজিদ ,বেলাট,দৌলতপুর ০৩। গলাকাটা মসজিদ,বারবাজার ০৪। জোড় বাংলা মসজিদ, বারবাজার ০৫। জাহাজমারী বন্দর,হাসিলবাগ,বারবাজার ০৬। ঐতিহাসিক সাতগাছিয়া মসজিদ, সাতগাছিয়া, কাষ্টভাঙ্গা ০৭। ঐতিহাসিক বলু দেওয়ান এর মাজার, ধোপাদি, কাষ্টভাঙ্গা। |
কোটচাঁদপুর |
- |
মহেশপুর |
০১। হাট খালিশপুর কাচারী বাগান, এস, বি, কে। ০২। দত্তনগর কৃষি ফার্ম ,স্বরূপপুর। ০৩। শহীদ বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান গ্রন্থাগার ও স্মৃতি যাদুঘর |
শিক্ষা,ভাষা ও সংস্কৃতি
শিক্ষা হচ্ছে জ্ঞানের আলোক বর্তিকা। আর কোন জাতীরআত্ম পরিচয়ই হচেছ তার সংস্কৃতি।সাংস্কৃতিককর্মকান্ডের মাধ্যমে জাতীর চিন্তা- চেতনার প্রতিফলন ঘটে। সংস্কৃতি হচ্ছেদর্পণ। দর্পণে যেমন নিজের চেহারা দেখা যায়, তেমনিকোন দেশের বা স্থানের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড দেখেই সে দেশের বাস্থানের সার্বিক চিত্র অনুধাবন করা যায়।
বাংলাদেশের অনাদিকাল থেকে লালিত ঐতিহ্যমন্ডিত সংস্কৃতির এক চারণভূমি ঝিনাইদহ। বৃটিশ এবংপাকিস্তান আমলেজনগোষ্ঠি চিরাচরিত বাঙালী মেজাজ ও ধারায় সংস্কৃতির চর্চাকরেছে। এর মাধ্যমে তাদের জীবন ধারা, চিন্তা-চেতনা, হাসি-কান্না, চাওয়া-পাওয়াকে তারা তুলে ধরেছে। ধর্ম এবং চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য তাদেরশিক্ষা ও সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে সর্বদা । মক্তবে -মসজিদে কিংবা মন্দিরে-গুরুগৃহে তারা বিদ্যার্জন করেছে। স্রষ্টার প্রতি তারা নিবেদিত হয়েছে।তারা ঈদ উৎসবেমেতেছে, মেতেছে বিভিন্ন পূজা পার্বন, নবান্ন, বর্ষবরণ, বিবাহ, কিংবা জাতীয় ও পারিবারিক নানা উৎসবে। পূঁথি পাঠের আসর বসেছে; লাঠিখেলা, ঘোড়দৌড়ের; নৌকা বাইচের অনুষ্ঠান করেছে। যাত্রাপালার আয়োজন করেছে গ্রাম-গঞ্জে। কাজের অবসরে এগুলোতে অবগাহন করে সবাই তৃপ্ত হয়েছে।
এ মাটির ক্ষণজম্মাপুরুষ লালনশাহ, পাগলাকানাই, পাঞ্জুশাহ, ইদু বিশ্বাস, সিরাজ সাঁই ভক্তি মূলক এবং দেহতত্ত্বের গান রচনা করেছেন। সমাজের উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্তসবাই এর পৃষ্ঠপোষকতা করেছে নানান ভাবে।ধীরে ধীরে তাদের জীবনবোধে সমাজ ও রাজনীতি সচেতনতা এসেছে এবং এর প্রতিফলন ঘটেছে গানে, নাটকে আর যাত্রায়। সময়ের দাবীতে আধুনিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভবের ফসল১৮৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত জেলার প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয়। এরপর ১৮৭২সালে হরিণাকুন্ডু প্রিয়নাথমডেলইংলিশ স্কুলপ্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৭৭ সালে ঝিনাইদহমডেলইংলিশ স্কুল (পরে সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়) জেলা শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জেলার প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৮৭৮ সালে কালিগঞ্জেরহেলায় গ্রামে। তারপর জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অসংখ্য উচ্চও নিম্ন -মাধ্যমিক বিদ্যালয় মদ্রাসা, মক্তব প্রভৃতি। ঝিনাইদহের প্রথম লাইব্রেরী‘ঝিনাইদহ পাবলিক লাইব্রেরী’প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯১৪ সালে; ঝিনাইদহের প্রথম প্রিন্টিং প্রেস ‘সিদ্ধেশ্বরী প্রেস’গত শতকের চল্লিশ দশকে ঝিনাইদহ শহরে স্থাপিত হয়েছে।
একদা ঝিনাইদহের সংস্কৃতি মূলতঃ নাটক এবংযাত্রা কেন্দ্রিক ছিল।সংগীতের ক্ষেত্রে লোক সংগীত, ধোয়া, জারী,ভাব সংগীতপ্রভৃতি ঝিনাইদহের সংস্কৃতিক পরিমন্ডলকেসমৃদ্ধ করেছে। নাট্যচর্চা ও লোকজ নাট্যধারায় ঝিনাইদহ জেলার রয়েছেএক গৌরবোজ্জ্বলঐতিহ্য। প্রথম মহাযু্দ্ধেরও আগে ১৯০৬ সালেপ্রতিষ্ঠিত হয় ঝিনাইদহ করোনেশন ড্রামাটিকক্লাব। ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রস্থলেবাঘাযতিন রোডে ছিল এর অবস্থান। করোনেশন ড্রামাটিকক্লাব কে ঘিরে ঝিনাইদহের নাট্য চর্চা শুরু হয়। ১৯৪৭ সালের আগে ‘টিপু সুলতান’‘কন্ঠহার’‘শাহজাহান’ইত্যাদি নাটক অভিনিত হয়েছিল।
১৯৪৭ এর পরে নাট্য আন্দোলনএবংলোকজ শিল্পে জোয়ার আসে। বেশ কিছু খ্যাতিমান শিল্পী ক্লাবের সাথে যুক্ত হন।বাঘা ডাক্তার ( পিতা যতীশ গাঙ্গুলী) রমেশ চন্দ্র বকশী, নৃপেন্দ্র নাথসেনগুপ্ত(ভোলা সেন),আলাউদ্দিন আহমেদ, প্রবোদ চন্দ্র মিত্র, আনোয়ার রহমান(কদুমিয়া), মনোয়ার রহমান (মনা), সুশিল কুমার কুন্ডু, মোবাশ্বের হেসেন প্রমুখশিল্পী বেশ কিছু নাটক মঞ্চস্থ করেন। ১৯৪৯ সালে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদেরসাহায্যার্থে করোনেশনড্রামাটিক ক্লাব ‘সিরাজদ্দৌলা’এবং ‘মানময়ী গার্লস স্কুল’নাটক দুটি দর্শনীর বিনিময়েমঞ্চস্থ করেন।
সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে শক্তসাংগঠনিক ভিত্তিতে জেলায় শুরুহয়েছে মূলতঃ ৫০দশক থেকে । ১৯৫৭ সালে জেলা শহরে শিল্পীসংঘ প্রতিষ্ঠার মাধ্যামে । শিল্পী সংঘের প্রতিষ্ঠতা সভাপতি ডাঃ সায়েদুলইসলাম ও প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক জাহিদ হোসেন (মুসা মিয়া) । এদের সাথে ছিলেনজেলার প্রথম বেতার শিল্পী ফসিউর রহমান(লিচু মিয়া), হরিপদ, গৌর পদ, জাহিদুল ইসলাম বুলু, শামসুর রহমান,শামসুন্নাহার(মনি), তৈয়বুররহমান(শুকুর) রওশন আরা বুলবুল, মনোয়ারা, আলেয়া, খুকু, তৃপ্তি প্রমুখ। আরনাটক নির্দেশনায় ছিলেন নৃপেন্দ্রনাথ সেন গুপ্ত (ভোলা সেন)।শিল্পী সংঘের নিজস্ব কার্যালয় ছিল।এরা নাটকমঞ্চস্থএবং সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করত।
এর কয়েক বছর পরেইগঠিতহয়“সবুজ সংঘ’'।সভাপতি এবং সম্পাদক হন যথাক্রমেগোলাম মোস্তফা (শিক্ষক) ও আব্দুর রউফ (শিক্ষক) এদের সাথে শিল্পী হিসেবেছিলেন আব্দুস সামাদ, মনজু, জামান খান,লতিফুল হোসেন, আমির হোসেন মালিতা,নির্মলেন্দু কুন্ডু, আনোয়ারুল কবির, মোকাররম হোসেন টুলু,
হাবুল চৌধুরী, আব্দুল গফুর, এনা মুখার্জী প্রমুখ। সবুজ সংঘের ও নিজস্ব কার্যালয় ছিল।এরাও অনেক নাটক মঞ্চস্থকরে এবং অসংখ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠনের আয়োজন করে। শিল্পী তৈরীতে সংগঠনদু’টিনিজেদেরকে নিয়োজিত করে প্রতিযোগিতার মনোভাব নিয়ে । জেলা শহরে এ সময় গড়েওঠে“শামিত অপেরা”।
সরকারী উদ্যোগে‘আর্টসকাউন্সিল' গঠিত হয় ১৯৬৪ সালে। পরবর্তীকালে সত্তর দশকের মাঝামাঝিসময়ে আর্টস কাউন্সিলের বাংলা নামকরণহয়‘শিল্পকলাপরিষদ' । বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটি শিল্পকলা একাডেমী নামে পরিচিত।প্রথম দিকে মহকুমা প্রশাসক পদাধিকার বলেএকাডেমীর সভাপতি এবং জনসংযোগ কর্মকর্তাছিলেন সম্পাদক। জেলা ঘোষিত হবার পরজেলাপ্রশাসক শিল্পকলা একাডেমীর সভাপতি থাকেন এবং দীর্ঘদিন সম্পাদকের দায়িত্বপালন করেছেন জনাব মোকররম হোসেন টুলু। জেলা শিল্পকলা একাডেমীনাট্যচর্চাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিককর্মকান্ডে অবদান রেখেছে। বেশ কিছু প্রবীণ ও নবীন নাট্য শিল্পী এই প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছেন।এদের মধ্যে প্রয়াত হয়েছেন নৃপেন্দ্রনাথ সেন গুপ্ত (ভোলা সেন), নাঈমউদ্দিন আহমেদ, সুকুমার দাস, সাওগাত -উল -ইসলাম প্রমুখ।যে সব প্রবীণ নাট্যশিল্পী এখনও জীবিত আছেন তারা হলেন খন্দোকার আনছার উদ্দিন, সুধীর কুমারসমাদ্দার, মোঃ জালাল উদ্দিন আহমেদ, ফজলুল হক, আব্দুল মান্নান, নির্মল কুমারঘোষাল(ঝুনু)। এছাড়া প্রবীণ শিল্পীআছেন রেজাউল আলম, আশরাফুল ইসলাম, মিন্টু প্রমূখ। মহিলাদের মধ্যে অভিনয়কে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন অঞ্জু এবং ইতি।
জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কার্যক্রম মূলতঃ তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত। প্রথমতঃ নাট্যচর্চা, মঞ্চায়ন এবং নাট্য আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনকরা।দ্বিতীয়তঃ সংগীত, বাদ্যযন্ত্রও নৃত্যকলাচর্চা ও শিক্ষার ব্যবস্থাএবং তৃতীয়তঃ প্রশাসনেরসহযোগিতায়রাষ্ট্রীয় দিবসগুলিতে সাংস্কৃতিকঅনুষ্ঠানের ব্যবস্থাকরা।
একাডেমীর শিল্পীরা বাংলাদেশশিল্পকলা একাডেমীসহ দেশের বিভিন্নস্থানেনাট্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। রাজশাহী, রংপুর,ঢাকা,কুষ্টিয়া,পাবনা,কুমিল্লা,যশোর,খুলনা প্রভৃতিস্থানে নাটকের সফল মঞ্চায়ন করে। একাডেমীর শিল্পীরা খুলনা বেতারে“মীর কাশীম”“পলাশীর আগে; “পলাশীরপরে; “উদয়লীলা', প্রভৃতি ঐতিহাসিক নাটক এবং সামাজিক নাটক, ঝিনেদাথেকে বলছি' মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নাটক“চশমারঅন্তর্ধান”নাটকে অভিনয় করে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। বংলাদেশ টেলিভশনে একাডেমীর শিল্পীরাআজ অবধি ২৪ টি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে এতদঞ্চলের সাংস্কৃতিরধারাকে পরিচিত করেছেন। একাডেমী হতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেআশির দশক হতে অজয় দাস,তপন, সুকুমার দাস(পচা দাস), মিতা বিশ্বাস, সোহাগমনি দাস, নুরুল হক, তৌহিদা আখতার রাত্রী, নিলু, মিন্টু , কাজল ও দিল আফরোজ রেবা, আজও বাংলাদেশ টেলিভশনে ও বেতারে নিয়মিত সংগীত পরিবেশন করে আসছেন। আলমগীর মাজমাদার, আব্দুর রাজ্জাক, দীন মোহাম্মদ বাবুরআড় বাঁশীরসুর মানুষকেআচ্ছন্ন করে।জয় গোপাল, বিপ্লব বিশ্বাস, রঞ্জন ভৌমিকের তবলার লহরীতে শ্রোতাকুল মুগ্ধ হন।
১৯৬৭ সালে অগ্রণী সমিতিপ্রতিষ্ঠা হয় শহরের কাঞ্চননগরে। এ সমিতিওসাংস্কৃতিককর্মকান্ডে জডিয়েপড়ে এবং পর পর বেশ কয়েকটিনাটক মঞ্চস্থসহ অসংখ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ১৯৭৩সালে অগ্রণী সমিতি প্রতিষ্ঠা করেঅগ্রণী সংগীত বিদ্যালয়। এটিই জেলার প্রথম সংগীত বিদ্যালয়। এর সভাপতি আমির হোসেন মালিতা এবং সম্পাদক ছিলেন এম,এ আনসারী। সহোযোগিতায়ছিলেন নাজির উদ্দিন লিচু, ওবায়দুল আলম, আমিনুর রহমান টুকু, সাজেদুল করিমবাবু প্রমুখ। বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ছিলেন বুলবুল চৌধুরী। শিক্ষক ছিলেন অজয়দাস ও অন্যান্যরা। বিদ্যালয়টিবেশ কয়েক বছর অসংখ্য সংগীত ও নিত্যশিল্পী তৈরী করে জেলার সংস্কৃতিকে আরোও একধাপ এগিয়ে দেয়।আশির দশকে এসেঝিনাইদহ জেলা শহরেএবং উপজেলা শহরেও বেশ কিছুনাট্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।এ গুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ নীচে দেয়া হলো।
ঝংকার শিল্পী গোষ্ঠীঃ ১৯৮৪ সালে ঝংকারশিল্পী গোষ্ঠীর আত্মপ্রকাশ । ঝঙ্কার এ পর্যন্তচল্লিশটিরওবেশী নাটক প্রযোজনা করেছে। প্রদর্শণী সংখ্যা শতাধিক। শান্তজোয়ার্দার এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক। ঝঙ্কার বাংলাদেশ টেলিভিশনেও নাটক পরিবেশন করেছে।
সূর্যোদয় নাট্যগোষ্ঠীঃ পাগলাকানাই মোড়ে এর কার্যালয়। ১৯৮৬ সালে সূর্যোদয় নাট্যগোষ্ঠির আত্মপ্রকাশ। বিশটিনাট্য প্রযোজনার মাধ্যমেমোটপ্রদর্শনী সংখ্যা চল্লিশের অধিক। এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তপন গাঙ্গুলী।
ঝিনেদা থিয়েটারঃ এ দলটির আত্মপ্রকাশ ১৯৮৬ সালে।দলটি শহর ছাড়াও বিভিন্ন গ্রাম- গঞ্জে নাটক মঞ্চস্থকরে যথেষ্ট সুনাম অর্জনকরেছে।
বিবর্তন নাট্যগোষ্ঠীঃ ১৯৯৩ সাথে বিবর্তনের আত্মপ্রকাশ। প্রদর্শনী সংখ্যা চল্লিশের উপর। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজু আহম্মেদ মিজান।পৃষ্ঠপোষকতা করছেন বাবু কনক কান্তিদাস ও নারায়ন নন্দী।
বাংলাদেশ গণশিল্পীসংস্থা, ঝিনাইদহ শাখাঃ ১৯৯৫ সাথে সংস্থারঝিনাইদহ শাখাপ্রতিষ্ঠিত হয়।সংস্থাটিনাটকছাড়াও বিভিন্নসাংস্কৃতিককর্মকান্ডে সম্পৃক্তথাকে। আব্দুস সালামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ গণশিল্পী সংস্থা, ঝিনাইদহ শাখা এগিয়ে চলছে।
অংকুর নাট্য একাডেমীঃ ১৯৯৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী মাহান ভাষা দিবসে অঙ্কুর নাট্য একাডেমীর যাত্রা শুরু।বয়সে খুব নবীন হলেও ইতোমধ্যে দলটিবাংলাদেশে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সদস্যপদ লাভ করতে সমর্থ হয়েছে। এ ছাড়া অঙ্কুর নাট্য একাডেমী বাংলাদেশ টেলিভশনেমঞ্চ নাটক প্রদর্শনীতেখুলনা বিভাগেঅগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডেএবং প্রশিক্ষণ শিবিরপরিচালনা করছে। অঙ্কুরপ্রযোজিত"বিচার এমন' নাটকটি বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে। এর সম্পাদক নাজিম উদ্দিন জুলিয়াস।
বিহঙ্গ নাট্যগোষ্ঠিঃ ১৯৯৫ সাথে বিহঙ্গের আত্মপ্রকাশ। এর চারটি নাটক এ পর্যন্ত২৭ বার প্রদর্শিত হয়েছে। নেতৃত্ব দানকরেছেন শাহীনুর আলম লিটন।
শিশু কিশোর নাট্যদলঃ ঝিনাইদহের একমাত্র শিশু কিশোর নাট্যচর্চাপ্রতিষ্ঠান। এর আত্মপ্রকাশ ১৯৯৫ সালে। নারায়ন চন্দ্র নন্দীএবং মোঃনাজিম উদ্দিন জুলিয়াস শিশুকিশোর নাট্যদলের যথাক্রমেসভাপতি ও সম্পাদক। এরা বারটিরও অধিক নাটক মঞ্চসহ করেছে। ঝিনাইদহ শিশু কিশোরনাট্যদল বাংলা পিপলস থিয়েটারএসোসিয়েশনের তালিকাভূক্তনাট্যপ্রতিষ্ঠান।
১। দীপায়ন একাডেমী, ঝিনাইদহ।
২। আনন্দ সাংস্কৃতিকসংগঠন, ঝিনাইদহ।
৩। শিল্পী সংঘ ইনিষ্টিটিউট, ঝিনাইদহ।
৪। সুর নিকেতন, ঝিনাইদহ।
৫। বাউল পরিষদ, ঝিনাইদহ।
৬। চারণ সাংস্কৃতিক একাডেমী, ঝিনাইদহ।
৭। হিউম্যানিজম , ঝিনাইদহ।
উপরোক্তসাংস্কৃতিকসংগঠন সমূহ ঝিনাইদহের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রেবিশেষ ভূমিকারেখেছে। রাষ্ট্রিয় ও জাতীয় অনুষ্ঠানাদিতে অংশ গ্রহণ করে নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছে।
চলচিত্র বিষয়কঃ
ঝিনাইদহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশেষ ব্যক্তিত্বজনাব আমির হোসেন মালিতারপরিচালিত ছবি"যে আগুনে পুড়ি' নির্মাণ করে যথেষ্ট প্রশংসিতহয়েছেন। উক্তচলচিত্রেপ্রথম অভিনয় শিল্পী হিসেবে এ্যাডঃ মোকাররম হোসেন টুলু অভিনয় করেন।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বও সংগঠকঃ ঝিনাইদহের সাংস্কৃতিক অঙ্গন যাদের দৃপ্ত পদচারনায় মুখরিতছিল, সে সব প্রয়াত সাংস্কৃতিক ব্যত্তিত্ব ও সংগঠকদের পরিচিতিতুলে ধরা হলো।
সুকুমার দাসঃঝিনাইদহ শহরের পবহাটীগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি মঞ্চ নাটকএবং যাত্রামঞ্চে সুনামের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। কূট চরিত্রের অভিনেতা হিসেবে দর্শকশ্রোতারপ্রশংসা লাভ করেন। স্পষ্টভাষী হিসেবে তিনি নাট্য জগতের সকলের কাছে পরিচিতছিলেন। নাট্য জগতে অসামান্য অবদান রাখার কারণে তিনি ঝিনাইদহশিল্পকলাএকাডেমী হতে সংবর্ধনা পান। বিশ শতকের আশির দশকে তিনি পরলোক গমন করেন।
ভানু চৌধুরীঃঝিনাইদহ শহরের ভানু চৌধুরীনাট্যজগতের তথা যাত্রা মঞ্চের একজনবলিষ্ঠঅভিনেতা ছিলেন। সে সময়ে এতদঞ্চলে তার সমকক্ষ অভিনেতা খুব কমই ছিল।তিনি সাধারনত রাজা , মহারাজা, বাদশা, সেনাপতি ও কূট চরিত্রে অভিনয় করতেন। বিশ শতকের ষাটের দশকে তিনিমৃত্যুবরণ করেন।
অনাথ বন্ধু বিশ্বাসঃঅনাথবন্ধুবিশ্বাস ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পবহাটীগ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ঝিনাইদহের নাট্য জগতের একজন বিখ্যাত অভিনেতা। তিনি স্পষ্ট সংলাপ প্রক্ষেপণ ও বিশুদ্ধ উচ্চারণের জন্য খ্যাত ছিলেন।১৯৮২ সালে এ বিশিষ্ট শিল্পী মৃত্যুবরণ করেন।
গৌর চন্দ্র বিশ্বাসঃগৌর চন্দ্র বিশ্বাস ঝিনাইদহযাত্রা জগতে অপ্রতিদ্বন্দ্বিঅভিনেতা বললে অত্যুক্তিহয়না। তিনি যুবক, বৃদ্ধ, রাজা, মহারাজা বিভিন্নচরিত্রে অভিনয় করে সুনাম অর্জন করেছেন। তিনি ছিলেনযাত্রা নাটকের পরিচালক। বিশ শতকের সত্তরেরদশকে তিনি পরলোক গমন করেন।
আজিজুর রহমান(ঠান্ডু মিয়া)ঃআজিজুর রহমান(ঠান্ডু মিয়া) ঝিনাইদহ সদরউপজেলার ভূটিয়ারগাতী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। একজন মঞ্চ অভিনেতা ছিলেন। মঞ্চে মেয়েলী কণ্ঠস্বর ও মেয়েলীচালচলন প্রদর্শনে অপ্রতিদ্বন্দ্বিহওয়ায়তিনিদর্শকদের প্রচুর প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তিনি নারী চরিত্রে অভিনয় করতেন।বিশ শতকের আশির দশকে তিনি ইন্তেকাল করেন।
নৃপেন্দ্র কুমার সেনগুপ্ত (ভোলা সেন)ঃঝিনাইদহ শহরের নৃপেন্দ্র কুমার সেন পেশায় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক হলেও নাট্য জগতে তার দখল ছিল প্রচুর।তাকে ঝিনাইদহের মঞ্চ নাটকের দিকপাল বললে অত্যুক্তিহয় না।বিশ শতকের আশির দশকে তিনি পরলোক গমন করেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস